রাহাদ সুমন, বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি॥ বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার দক্ষিণ বাইশারী গ্রামে মিজানুর রহমান বাবুল নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে একই ইউনিয়নের গরদ্বার গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে মানিককে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, সোমবার (২১ এপ্রিল) দিবাগত রাত দুইটা-আড়াইটার দিকে একদল ডাকাত উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডে দক্ষিণ বাইশারী গ্রামের দফাদার বাড়িতে হানা দিয়ে মিজানুর রহমান বাবুলের (বাবুল দফাদার) বসত বিল্ডিংয়ের জানালার গ্রিল কেটে ও রুমের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে বাবুল দফাদারের মুখ ও হাত-পা বেধে ফেলে মারধর করেন।
এসময়, ৭/৮ জনের সশস্ত্র ডাকাত দল পাশের রুমে থাকা পুত্র বধু নুসরাত ও তার এক বছর বয়সী মেয়ে সামিয়ার গলায় ধারলো অস্ত্র ধরে ভয়ভীতি দেখিয়ে ষ্টীলের আলমিরা ও ওয়ারড্রপ,কাঠের ওয়াল সুকেস ও কয়েকটি ট্র্যাঙ্ক ভেঙ্গে নগদ প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা,২০/২১ ভরি স্বর্নালঙ্কার ও দুইটি মোবাইল ফোন সহ বিভিন্ন মালপত্র লুট করে নিয়ে যায়। রাত আনুমানিক দুইটা-আড়াইটার দিকে সশস্ত্র ডাকাতদল ওই বাসায় প্রবেশ করে কয়েক ঘন্টা অবস্থান করে এক বছরের শিশুসহ পরিবারের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে স্টীল ও কাঠের বিভিন্ন আসবাবপত্র ভেঙ্গে তছনছ করে লুটপাট চালিয়ে ফজরের আজানের মিনিট পাঁচেক পূর্ব তারা বের হয়ে যায় বলে বাবুল দফাদারের পুত্রবধু নুসরাত জানায়।
তিনি আরও জানান, ডাকাতদলের মধ্যে অনেকে মুখোশধারী ছিলেন।
এ বিষয়ে হজ ট্রেুনিংয়ের জন্য রাজধানীতে অবস্থান করা বাবুল দফাদারের স্ত্রী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নাসিমা বেগম জানান, বাসায় তার দুই মেয়ের বিয়ের জন্য রাখা ও পুত্রবধুর বিয়ের স্বর্র্নালঙ্কারসহ প্রায় ২০/২১ ভরি স্বর্নালঙ্কার ও তাদের স্বামী-স্ত্রীর হজে যাওয়ার জন্য রাখা দুই লক্ষাধিক টাকা ডাকাতরা নিয়ে গেছে। এ ব্যপারে মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকালে মিজানুর রহমান বাবুল বাদী হয়ে বানারীপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এরআগে সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এ প্রসঙ্গে বানারীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোস্তফা বলেন, মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সকালে বানারীপাড়া পৌর শহরের বন্দর বাজার এলাকা থেকে মানিক (৫০) নামের একজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করে জিঙ্গাসাবাদ করা হচ্ছে এবং এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
প্রসঙ্গত, গত ১০ এপ্রিল সন্ধ্যায় উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের গরদ্বার গ্রামে আ. সাত্তার মোল্লার বাড়িতে মুখোশধারী ডাকাতদল হানা দিয়ে মাগরিবের নামাজরত তার স্ত্রী তাহমিনা বেগমের গলায় ধারালো ছুরি ধরে তাকে জবাই করে হত্যার ভয় দেখিয়ে সাড়ে তিন ভরি স্বার্নালঙ্কার ও নগদ তিন লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
এ রহস্য উদঘাটন ও জড়িতরা গ্রেফতার হওয়ার পূর্বেই মাত্র ১২ দিনের ব্যবধানে পাশর্ব র্তী দক্ষিণ বাইশারী গ্রামে শিশুর গলায় ধারালো অস্ত্র ধরে এ দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা এবং এর কিছুদিন পুর্বে একই গ্রামে প্রয়াত শিক্ষক সুনীল দাসের বাড়িতে সংঘটিত ডাকাতির ফলে ওই এলাকাসহ গোটা উপজেলা জুড়ে জনমনে এখন “ডাকাত আতঙ্ক” বিরাজ করছে।